পাল যুগে বৌদ্ধধর্মের প্রসার কিভাবে হয়েছিল?

পাল রাজারা ব্রাহ্মণ ছিলেন না, সম্ভবত ক্ষত্রিয় বা কায়স্থ ছিলেন। তাঁরা বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী হয়ে উঠেছিলেন। তবে শশাঙ্কের আমলের বৌদ্ধধর্মের থেকে পালযুগের বৌদ্ধধর্ম অনেকটা আলাদা ছিল। পাল যুগে মহাযান বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে অন্যান্য দার্শনিক চিন্তাধারা মিলে গিয়ে বজ্রযান বা তন্ত্রযান বা তান্ত্রিক বৌদ্ধমতের জন্ম হয়েছিল। এই মতের নেতাদের বলা হতো সিদ্ধাচার্য। এছাড়া সহজযান ও কালচক্রযান নামে আরো দু-রকমের বৌদ্ধ ধর্মমতের এ সময় জন্ম হয়। সহজযানকে সহজিয়াও বলা হয়।

এই ধর্মীয় ভাবনায় না ছিলো দেবদেবীর স্বীকৃতি, না মন্ত্র-পুজো-আচার- অনুষ্ঠানের গুরুত্ব। এই মতে বিশ্বাসীরা গুরু এবং শিষ্যের মধ্যে গভীর যোগাযোগে বিশ্বাস করত। তাঁরা মনে করতেন যে, জ্ঞান মানুষের ভিতরেই থাকে এবং কোনো শাস্ত্রের বই পড়ে তা পাওয়া সম্ভব নয়। পরিষ্কার মন এবং আত্মার উপর খুব জোর দেওয়া হতো। তাঁরা বলতেন যে, আত্মা শুদ্ধ হলে তবেই মানুষ নির্বাণ বা চিরমুক্তি লাভ করতে পারে।

ব্রাহ্মণ্য গোঁড়ামির বাইরে এই মতবাদগুলিতে উদার ধর্মীয় পথের খোঁজ পেয়েছিল সাধারণ মানুষ। তা ছাড়া সিদ্ধাচার্যরা যেমন লুইপাদ, সরহপাদ, কাহ্নপাদ, ভুসুকুপাদ প্রমুখ তাদের মত প্রচার করতেন স্থানীয় ভাষায়। পালযুগের শেষ দিক থেকে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যরা এই ভাষায় চর্যাপদ লেখা শুরু করেছিলেন। চর্যাপদের মধ্য দিয়ে তখনকার বাংলার পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ছবি ফুটে ওঠে। এভাবে তাদের হাত ধরেই আদি বাংলা ভাষার বিকাশ ঘটেছিল।

Login / Register

(x)
Activation


(x)
Update password

(x)
Enter password


(x)
Optimized by Optimole