চোলরাজ্যের শাসন এবং কর ব্যবস্থা সম্পর্কে যা জান লেখ।

চোল রাজ্যের প্রধান ছিলেন রাজা। তাঁকে মন্ত্রীদের এক পরিষদ সহায়তা করত। রাজ্যকে কয়েকটি প্রদেশ বা মণ্ডলমে ভাগ করা হয়েছিল। কৃষকদের বসতিকে ঘিরে গড়ে ওঠা গ্রামকে শাসন করত গ্রাম-পরিষদ বা উর। এই রকম কয়েকটি গ্রামকে নিয়ে গঠিত হতো নাড়ু। উর এবং নাড়ু- এই দুই স্থানীয় সভা স্বায়ত্তশাসন, বিচার এবং রাজস্ব বা কর সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করত। ব্রাহ্মণদের ব্রহ্মদেয় জমি দেওয়ার ফলে কাবেরী উপত্যকায় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে বহু নতুন নতুন গ্রামের পত্তন হয়েছিল। এই নতুন গ্রামগুলিকে তদারকি করার জন্য বয়স্ক মানুষদের নিয়ে তৈরি হতো সভা। তারা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করত। ব্যবসায়ীদের স্বার্থ এবং বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলার জন্য ‘নগরম’ নামের আরেকটি পরিষদ তৈরি হয়েছিল।

এই সময় রাজারা অনেকেই উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন উপাধিতে নিজেদেরকে ভূষিত করতেন। যেমন মহারাজা-অধিরাজ, ত্রিভুবন-চক্রবর্তীন এই রকম সব। তবে এঁদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয় সামন্ত বা ধনী কৃষক, ব্যবসায়ী এবং ব্রাহ্মণদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিতেন। কৃষক, পশুপালক এবং
কারিগরদের উৎপাদন থেকে রাজা ভাগ নিতেন। ভূমি-রাজস্ব ছাড়াও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও কর সংগ্রহ করা হতো। সেখান থেকেই রাজার বিলাসবহুল জীবন চলত। সৈন্যবাহিনীর দেখাশোনা, দুর্গ এবং মন্দির বানানোয় সেই অর্থ খরচ করা হতো। তাছাড়া, যুদ্ধের সময় বিজয়ী শক্তির সৈন্যরাও
পরাজিত অঞ্চলে যথেষ্ট লুঠপাট চালাত। স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলোর হাতেই খাজনা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হতো। খাজনার একাংশ ঐ পরিবারগুলি নিজেদের জন্য রেখে, বাকি অংশ রাজকোষাগারে জমা দিত। কোনো কোনো সময় পরাজিত রাজাদের ক্ষমতা এবং গুরুত্ব বুঝে তাদের অধীনতা স্বীকার
করিয়ে নিয়ে জমি-জায়গা দান হিসাবে ফেরত দেওয়া হতো। কৃষিজমির পরিমাণ বাড়ানোর জন্য ব্রাহ্মণদের অনেক সময় ব্রহ্মদেয় ব্যবস্থার মাধ্যমে জমি দান করা হতো।

Login / Register

(x)
Activation


(x)
Update password

(x)
Enter password


(x)
Optimized by Optimole